পার্ল হার্বার এর ঘটনার পর জাপানিজ কম্বাইন্ড ফ্লিট এর কমান্ডার ইন চিফ এমন একটি যুদ্ধাস্ত্র উদ্ভাবনের কথা ভাবলেন, যা আকস্মিক আক্রমণ করে সমুদ্রে ভাসমান অ্যামেরিকান নেভি শীপ গুলো চোখের পলকেই ডুবিয়ে দিতে সক্ষম হবে।
এমতাবস্থায় তারা একটি সাবমেরিন তৈরী করার সিদ্ধান্ত নিলো যা যুদ্ধ বিমান বহন করতে পারবে এবং প্রয়োজনে মাথা তুলে বিমান উড়াতে পারবে। তারা এই সাবমেরিন তৈরীর প্রজেক্ট হাতে নিলো এবং এর নাম দিলো Sen Toku I-400-class সাবমেরিন। সবমিলিয়ে এই ক্লাসের মোট ১৮ টি সাবমেরিন তৈরীর সিদ্ধান্ত নেওয়া হলো।
সেই লক্ষে ১৯৪২ সালের ১৭’ই মার্চ এই সাবমেরিনের জন্য M6A1 Seiran Seaplane তৈরী করে, যা ৮০০ কেজি যুদ্ধাস্ত্র বহন করতে সক্ষম ছিলো। এই বিমান রাখার জন্য সাবমেরিনটির উপরে তৈরী করা হয়েছিলো একটি ওয়াটার প্রুফ সিলিন্ডারাকৃতি হ্যাংগার, যাতে ৩টি বিমান সুরক্ষিত রাখা যেতো।
এই সাবমেরিনে ছিলো ৩ ব্যারেল বিশিষ্ট ৩টি এবং ১ ব্যারেল বিশিষ্ট ১টি মোট ৪টি ২৫ মি.মি অটোক্যানন। এছাড়া এটিতে একটি ১৪০ মি.মি নেভাল গান ছিলো যার রেঞ্জ ১৫ কিলোমিটার। এই সব মরনাস্ত্রের সাথে ছিলো ৮ টি ৫৩৩ মি.মি টর্পেডো যার প্রতিটির ওজন ছিলো ৫ টন !
এটিতে মোট ৬ টি ইঞ্জিন ছিলো, তার মধ্যে ৪ টি ছিলো ১৬৮০ কিলোওয়াট এর ডিজের ইঞ্জিন যা সার্ফেসড অবস্থায় চালু থাকত এবং ২টি ১৬০০ কিলোওয়াট এর ইলেকট্রিক মোটর ছিলো যা সাবমার্জড অবস্থায় চালু থাকতো।
কিন্তু ১৯৪৫ সালে দুই বছরের প্রচেষ্টায় ৩ টি তৈরী হওয়ার পর বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়ে যায় এবং তারা বুঝতে পারে তাদের এই চেষ্টা বিফল। তাই তারা দেরি না করে তাদের নির্মাণাধীন বাকি ১৫ টির কাজ বন্ধ করে দেয়।
সংক্ষিপ্ত বিবরণঃ
- টাইপ : সাবমেরিন এয়ারক্রাফট ক্যারিয়ার
- বিল্ট : ১৯৪৩-১৯৪৫
- ওজন : ৬৫৬০ টন
- দৈর্ঘ্য : ১২২ মিটার
- বীম : ১২ মিটার
- ড্রাফট : ৭ মিটার
- স্পিড : সার্ফেসড অবস্থায় ১৮.৭ কি.মি/ঘন্টা এবং সাবমার্জড অবস্থায় ১২ কিমি/ঘন্টা
- ডেপথ : ১০০ মিটার
- ক্রু : ১৪৪ জন নাবিক
- ইউনিট কস্ট : ২ কোটি ৮৮ লক্ষ জাপানি
ইয়েন (১৯৪২)
আর্মামেন্টঃ
- ৩টি M6A1 Seiran সি-প্লেন
- ৮ টি ৫৩৩মি.মি টর্পেডো
- ১ টি ১৪০ মি.মি নেভাল গান
- ৩ টি ৩ ব্যারেল এবং ১টি ১ ব্যারেল বিশিষ্ট ২৫ মি.মি অটোক্যানন
আরো কিছু ছবিঃ
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.