RQ-170 Sentinel হচ্ছে আমেরিকার লকহিড মার্টিন কর্তৃক তৈরি একটি উচ্চ পাল্লার সার্ভেইলেন্স ও স্পাই ড্রোন।
এর লো-অবজার্ভেবল ডিজাইন একে ইরান, চায়না, ইন্ডিয়া ও পাকিস্তানে গোপনে সরাসরি বিভিন্ন ধরনের মিসাইল টেস্ট, টেলিমেট্রি এবং বহুমাত্রিক গোয়েন্দাবৃত্তি মূলক তথ্য উপাত্ত সংগ্রহে যথেষ্ট সফল করে তুলে।
২৭.৪৩ মিটার চওডা ও ১.৮২ মিটার উচ্চতার এই ড্রোনটি মূলত গোয়েন্দা নজরদারি, পরিদর্শন, পর্যবেক্ষণ, টার্গেট একুইজিশন এবং টার্গেট এরিয়ায় ইলেকট্রিক ওয়ারফেয়ার মিশনগুলো পরিচালনার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে।
মার্কিন বিমানবাহিনী ও সি আই এ কর্তৃক ব্যবহৃত এই ড্রোনটির ডিজাইন ও সক্ষমতা সম্পর্কে খুব কমই তথ্য পাওয়া যায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে এটি বিভিন্ন ধরনের এরিয়াল রিকনেসেন্স সিস্টেম সংযুক্ত একটি স্টিলথ্ ড্রোন। ধারনা অনুযায়ী ড্রোনটি ৫০ হাজার ফুট উপরে পর্যন্ত ও উড়তে পারে।
এতে ব্যবহার করা হয়েছে 1 × Garrett TFE731 বা General Electric TF34 টার্বোফ্যান ইঞ্জিন।
ড্রোনটি আকারে দেখতে অনেকটা বি ২ স্পিরিট বোম্বারের মত। এই ড্রোনটি এপর্যন্ত সবমিলিয়ে ২০ টির মত তৈরি করা হয়েছে।
ড্রোনটি এপর্যন্ত বিভিন্ন অপারেশনে সফলভাবে ব্যবহার করা হয়। যার মধ্যে আফগানিস্তান, ইরান ও পাকিস্তানে পরিচালিত অপারেশনগুলো উল্লেখযোগ্য।
পাকিস্তানে পরিচালিত অপারেশন গুলোর মধ্যে ২০১১ তে ওসামা বিন লাদেন হত্যা অন্যতম। ওসামা বিন লাদেনকে হত্যা করার সময় এবং তার আগে CIA এই ড্রোনটি দিয়ে বিভিন্ন ধরনের গোয়েন্দামূলক তথ্য সংগ্রহ করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের ধারনা অনুযায়ী এই ড্রোনটি স্টিলথ্ ড্রোন হলেও ইরানের কাছে এটি মাইর খায়।
ইরানের আকাশসীমায় গোপনে নজরদারির সময় ২০১১ সালে ডিসেম্বর মাসে ইরানের সশস্ত্র বাহিনী একটি RQ-170 ড্রোন আটক করে। ইউএস মিলিটারি প্রথমে তা অস্বীকার করলেও পরবর্তীতে একটি RQ-170 হারানোর কথা স্বীকার করে।
ইরান মূলত এর সিগনাল হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে এই ড্রোনটি আটক করতে সক্ষম হয়।
এর আগেও আমেরিকা বেশ কয়েকবার ড্রোনের মাধ্যমে ইরানের পারমানবিক কর্মসূচি সম্পর্কে বেশ স্পর্শকাতর তথ্য সংগ্রহ করে।
আমেরিকান প্রশাসন ইরানের কাছে ড্রোনটি ফেরত চাইলে ইরান তা প্রত্যাখ্যান করে এবং উল্টো জাতিসংঘের নিরাপত্তা কাউন্সিলে আমেরিকার বিরুদ্ধে আকাশসীমা লঙ্ঘন করার অভিযোগ দায়ের করে।
শুধু তা-ই নয়, কপিবাজ চীনের ভূমিকা এবার ইরান অবলম্বন করে। ইরান এই ড্রোনটির প্রযুক্তি সফলভাবে হাতিয়ে নেয় এবং ড্রোনটির অনুরূপ কপি তৈরি করে।
অনেক ধারনা অনুযায়ী RQ-170 থেকে কপি করা ইরানের IR-RQ-170 ড্রোনটি আমেরিকান ভার্সনের চেয়েও উন্নত।
আমেরিকার ড্রোনটি যেখানে শুধুমাত্র সার্ভেইলেন্স এ সক্ষম সেখানে, ইরানের কপি করা মডিফাইড এই ড্রোনটি ৪ টি বোমা বহনে ও সক্ষম।
অর্থাৎ ইরান এই UAV টি কে UCAV (Unmanned Combat Aerial Vehicle) এ ও পরিণত করে।
আমেরিকাকে এভাবে শিক্ষা দেওয়ার জন্য ইরানের ভূমিকা সত্যিই প্রশংসনীয়।
ইরানের কপি করা IRQ-170 ড্রোনের কিছু এক্সক্লুসিভ ছবিঃ
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.