রাইফেলটি বেলজিয়ামের এফএন হার্স্টাল কোম্পানি ডিজাইন করেছে। ২০০১ সালে এটি আবুধাবি, ইউএই তে প্রথম জনসম্মুখে আনা হয়। এটি গ্যাস অপারেটেড, অটোমেটিক এবং সকল গুণের অধিকারী ধরণের রাইফেল। এটিতে ৫.৫৬*৪৫ এন রাউন্ড ব্যবহার করা হয়। সেফটি সিস্টেম এবং ট্রিগারের যন্ত্রাংশ সরাসরি এফএন পি-৯০ পার্সোনাল ডিফেন্স ওয়েপন থেকে আনা হয়েছে। ব্যারেল, হ্যামার, ফায়ারিং পিন এবং স্প্রিং বাদে সবকিছু নাইলন এর তৈরি।
রাইফেলের বাহ্যিক দিকের বেশিরভাগ যৌগিক পদার্থের তৈরি। ৩০ রাউন্ডের বক্স ম্যাগাজিন আছে (স্ট্যানাগ)। এর ক্রোমড হ্যামার ফোর্জড ব্যারেল অত্যন্ত ডিউরেবল যার লাইফ ২০০০০ রাউন্ড। এর প্রধান সাইটিং সিস্টেন হল একটি টেলিস্কোপিক সাইট যাতে ফিক্সড ১.৬* ম্যাগনিফিকেশন থাকে। রাইফেলটির ভিতরে ময়লা প্রবেশ এর সম্ভাব্য পথগুলা বন্ধ করে ডিজাইন করা হয়েছে।
এর ব্যারেলের মাজলে ফ্ল্যাশ সুপ্রেসর আছে যা উপরের দিকে কোনাকুনি করে কাটা যাতে ফোর্স উপরের দিকে যায় এবং একাধারে ফায়ার করলে রাইফেল উপরের দিকে উঠে না। এর একটি ইউনিক বৈশিষ্ট্য আছে। এটি ফায়ারিং এর পর কার্টিজগুলো সামনের দিকে ব্যারেলের ডানপাশের ইজেকশন সিস্টেম দিয়ে বের হয়ে যায়। ৩০ রাউন্ড ম্যাগাজিনে থাকলে ৬ বারে একেবারে ৫ টি রাউন্ড বের করে দেয়। এর অভ্যন্তরীণ চেম্বার আছে যা ৫ টি খালি কার্টিজ ধারণ করতে পারে। ৫ম কার্টিজ ফায়ার হয়ে গেলে ইজেকশন সম্পন্ন হয়।
এই সিস্টেমটা এফএন হার্স্টাল প্যাটেন্ট করেছে ১৯৯৭ সালে। এর চরম সুবিধা হল কার্টিজ সামনে পড়ে তাই বামহাতি ব্যক্তি কোনো মোডিফিলেশন ছাড়াই এটি ব্যাবহার করতে পারে। এছাড়াও যুদ্ধ ক্ষেত্রে কার্টিজের আঘাত লেগে সহযোদ্ধাদের আঘাত লাগার সম্ভাবনা নেই। সামনে আসলে আগে প্রোজেক্টাইল লেগে মরবে।এছাড়াও এর জিএল১ নামক আন্ডারব্যারেল পাম্প একশন গ্রেনেড লঞ্চার আছে যার ওজন খালি অবস্থায় ১ কেজি। তবে আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল এফ২০০০ এর ট্রিগারের নিচেই এর ট্রিগার থাকে তাই হাত সরানোর প্রয়োজন হয়না।
এবার সবচেয়ে বড় আশ্চর্যজনক ব্যাপারটা বলি, এর নিজস্ব ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম আছে যা একটি লেজার রেঞ্জফাইণ্ডার এবং অপ্ট্রো ইলেক্ট্রনিক সিস্টেমের সংমিশ্রণ এ তৈরি। পুরো সিস্টেমটি ৯ ভোল্টের ব্যাটারি দিয়ে চালিত যা বাটস্টকের ভিতরে থাকে। এটি বাতাসের গতি, দিক, দুরত্ব প্রভৃতি গণনা করে যখন এইম করা স্থানের ১^২ মিটারের মধ্যে গুলি লাগবে তখনই কেবল গ্রীণ সিগনাল দেয়। তবে গ্রেনেড লঞ্চার এর ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আরো এডভান্সড। এটি গ্রেনেডের ব্যালেস্টিক ট্রাজেকটরি বা গতিপথ স্ক্রিনে দেখিয়ে দেয়।
গ্রেনেড লঞ্চার ছাড়া বিভিন্ন ভার্সনভেদে এর ওজন ৩.৩৯-৩.৬ কেজি পর্যন্ত এবং রেঞ্জ ৫০০ মিটার, মাজল এ প্রোজেক্টাইলের গতি ৯০০মি/সে, রেট অফ ফায়ার – ৮৫০ রাউন্ড/মি।
বুলপাপ রাইফেল মানে অনেক গর্দভকে বলতে দেখেছি এর ব্যারেলের দৈর্ঘ্য কম এবং রেঞ্জ ও এজন্য কম। গর্দভ, বুলপাপ আর স্ট্যান্ডার্ড যাই হোক, ম্যাগাজিনের উপরের রিসিভার থেকে ব্যারেল শুরু হয়। যদি বিশ্বাস না করেন তাহলে বলি, এই রাইফেলের মিনিমাম ব্যারেল লেন্থ ১৬ ইঞ্চি এবং ম্যাক্সিমাম ১৭.৪ ইঞ্চি। এছাড়াও টার-২১ এবং ফামাসের ও মিনিমাম ১৬ ইঞ্চি ব্যারেলের দৈর্ঘ্য। বেলজিয়াম, ক্রোয়েশিয়া, পূর্ব তিমুর, লিবিয়া, ভারত, পাকিস্তান, পেরু, পোল্যান্ড, সৌদি আরব, স্লোভেনিয়া এটি ব্যবহার করছে।
এমনকি ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস এই FN F2000 রাইফেল ব্যবহার করে।
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.