উত্তর কোরিয়া সর্বপ্রথম ৭০ এর দশকের মাঝামাঝি মিশর থেকে স্কাড বি সিরিজের রকেট গোপনে সংগ্রহ করেছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়

সময়টা ১৯৭৬ সাল তখন এই স্কাড মিসাইলের উপর ভিত্তি করেই নিজেদের মিসাইলের হাতেখড়ি হয়। পরবর্তী সময়ে সোভিয়েত ভেঙ্গে গেলে উত্তর কোরিয়া একটি বিবরণ অনুযায়ী ইউক্রেনের কালোবাজার থেকে রকেট ইঞ্জিন ক্রয় করে সেই প্রযুক্তির আরো বিকাশ ঘটায়৷ ইউক্রেনের নিপ্রো শহরে অবস্থিত সাবেক সোভিয়েত আমলের রকেট তৈরির কারখানাটির নাম ইয়ুঝমাশ৷ 

রকেট প্রযুক্তিতে উত্তর কোরিয়ার চমকপ্রদ প্রগতির সঙ্গে ইউক্রেনের এই ইয়ুঝমাশের সংযোগ ছিল বলে ধারণা করা হয়। তবে ইয়ুঝমাশের পরিচালক জুশচেভস্কি পরবর্তী সময়ে জেরায় বলেন ইয়ুঝমাশ ইঞ্জিনিয়ারিং কারখানাটি সোভিয়েত ভেঙ্গে গেলে চরম আর্থিক বিপাকে পরে সেই কারণেই হয়তো কারখানার কোন ইঞ্জিনিয়ার ও সাবেক কর্মীদের সঙ্গে যোগসাজসে পুরনো সোভিয়েত রকেট ইঞ্জিন বা তার যন্ত্রাংশ উত্তর কোরিয়ায় পাচার করেছে৷ এনওয়াইটি এই প্রসঙ্গে লন্ডনের ‘ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজ’ (আইআইএসএস)-এর একটি সমীক্ষা ও মার্কিন গুপ্তচর সংস্থাগুলির অনুমানের কথা উল্লেখ করেছে৷ এই কোম্পানিটি শুধু উত্তর কোরিয়া নয় এমনকি ইরানের কাছেও রকেট ইঞ্জিন বিক্রি করার অভিযোগ রয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার হোয়াসং ১২ ও ১৪ গোত্রের মাঝারি পাল্লার ও আন্তঃ-মহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্রগুলি সম্ভবত মূল মার্কিন ভূখণ্ডে পৌঁছানোর ক্ষমতা রাখে৷ উত্তর কোরিয়ার পক্ষে মাত্র দু’বছরের মধ্যে রকেট প্রযুক্তিতে এই পরিমাণ প্রগতি করা শুধুমাত্র বিদেশি সরবরাহকারী, এক্ষেত্রে প্রাক্তন সোভিয়েত ইউনিয়নের সাবেক সদস্যদেশগুলির সাহায্যেই সম্ভব তবে ইউক্রেনকে সবার আগে এগিয়ে রাখা হয়।

উত্তর কোরিয়ার হোয়াসং ক্ষেপণাস্ত্র গুলিতে এক চেম্বারের ইঞ্জিন ব্যবহার করা হয়েছে, তা অনেকটা সোভিয়েত আরডি-২৫০ রকেট ইঞ্জিনের মতন। তবে আরডি-২৫০-এর ইঞ্জিনের দু’টি চেম্বার ছিল৷ ষাটের দশকে এই রকেট ইঞ্জিন তৈরি করা হয়৷

ইউক্রেনের ইয়ুঝমাশ কারখানায় আরডি-২৫০ রকেট ইঞ্জিন তৈরি করা হতো। ইউক্রেনে আরডি-২৫০ রকেট ইঞ্জিন যথেষ্ট পরিমাণে তৈরি করা হয়েছিল। যার বেশীর ভাগ সংখ্যাটা শত শত কিংবা তারও বেশি আরডি-২৫০ রকেট ইঞ্জিন ইউক্রেনে রয়ে গেছে৷ তাই এইসব রকেট ইঞ্জিন কি অবস্থায় রয়েছে তা নিয়ে ইউক্রেন সরকারও কোন সঠিক উত্তর দিতে পারেনি। ধারণা করা হয় কোম্পানির কর্মচারিরাই টাঁকা বিনিময়ে এই সব উত্তর কোরিয়া ও ইরান সহ অনেক দেশে গোপনে প্রযুক্তি বিক্রি করে দিয়েছে।

সোভিয়েত ইউনিয়নের এসএস-১৮ বা শয়তান ইন্টারকন্টিনেন্টাল ব্যালিস্টিক মিসাইল তৈরি হতো এই ইয়ুঝমাশ কারখানায়৷ R-36 আইসিবিএমে আরডি-২৫০ রকেট ইঞ্জিন ব্যাবহার করা হয়।

Facebook Comments

comments