ডাসল্ট রাফেল বিমানের নাম শুনেছেন অনেকেই। কিন্তু স্পেক্ট্রার নাম শুনেছেন এরকম লোক কমই পাওয়া যাবে। এটি ডাসল্ট রাফেলের একরকম স্টেলথি বডি না হওয়া সত্বেও স্টেলথ ক্যাপাবিলিটি প্রদান করে।
আজ জেনে নিবো এর খুঁটিনাটি।
স্পেক্ট্রা হল রাফেলের নিজস্ব প্রতিরক্ষার জন্য একটি ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেম যা এমবিডিএ ও থেলস কোম্পানি প্রস্তুত করেছে শুধুমাত্র রাফেল বিমানের জন্য। স্পেক্ট্রাই হল রাফেল এর দুর্দান্ত টিকে থাকার ব্যবস্থা যা বর্তমানের উন্নত আকাশ, ভুমির শত্রু থেকে রক্ষা করে। এটি পুরোপুরি সমন্বিত একটি সিস্টেম যা বিমানটির অন্যান্য সিস্টেমের সাথে অখন্ডিত এবং একইসাথে বিভিন্ন পদ্ধতিতে সম্ভাব্য হুমকি থেকে সতর্ক করতে পারে।
যেমন: শত্রুপক্ষীয় রাডার, মিসাইল ও লেজার।
বিবরণঃ
স্পেক্ট্রাতে খুবই ভরসাযোগ্য লং রেঞ্জ টার্গেট খুঁজা, পরিচয় জানা ও অবস্থান জানার সিস্টেম আছে। সিস্টেমটি তাতক্ষনিকভাবে পাইলটকে সবচেয়ে আত্মরক্ষামূলক ব্যাবস্থাটি পাইলটকে সাজেস্ট করে! তখন পাইলট প্রয়োজন অনুযায়ী রাডার জ্যামিং, ইনফ্রারেড ও রাডার সিস্টেম ডিকয় করা (ধোকা দেয়া) এবং ধোকা দেয়ার মত ম্যানুয়েভার নিতে পারে।
স্পেক্ট্রায় আছে দুইটি ইনফ্রারেড মিসাইল ডিটেক্টর, নতুন জেনারেশন এর মিসাইল লঞ্চ ডিটেক্টর যেটাতে দুইটি ইনফ্রারেড এরে ডিটেক্টর (দুইটিতেই আলাদা সেন্সর আছে যাতে ফিশ আই লেন্স ব্যাবহৃত হয়েছে যা বিমানের চারিদিকে এটি গোলাকার দর্শন প্রদান করে। এই সিস্টেমটি ভুল এলার্ম বন্ধ করে বা ভুল টার্গেট ডিটেক্ট হলে তা ধরে ফেলে। ভবিষ্যৎ এ ডাইরেক্ট ইনফ্রারেড কাউন্টারমিজার সিস্টেম লাগানো হলে এই সিস্টেমটির সাথে একত্রীভূত করা হবে। ইনফ্রারেড সিগ্নেচার ও ম্যানপ্যাড থেকে এটি সুরক্ষা দেয়। DDM-NG নামক এই সিস্টেম মিসাইলের জ্বলন্ত ইঞ্জিন এর তাপ থেকে মিসাইল ডিটেক্ট করে। অর্থাৎ যেকোন মিসাইল এটি শনাক্ত করতে সক্ষম।
থেলস ও ডাসল্ট গ্রুপ স্টেলথি জ্যামিং মোড স্পেক্ট্রায় রেখেছে। সিস্টেমটা ঠিক কিভাবে কাজ করে তা অজানা তবে এটি এক্টিভ ক্যান্সিলেশন, ইউনিক ইডাব্লিউ টেকনিক যা একেবারে নিখুঁতভাবে শত্রু রাডার এর অবস্থান বের করে, প্রতিটি বিক্ষিপ্ত তরঙ্গ কপি করে এবং সেই তরঙ্গ উলটা প্রেরণ করে; ফলস্বরুপ, রাডার কিছুই দেখে না।
স্পেক্ট্রা একটি সম্মিলিত সিস্টেম, রাফেল বিমানের পুরো এয়ারফ্রেম জুড়ে অনেক সেন্সরের সমন্বয়ে এটি গঠিত। এই সেন্সরগুলো সাধারণ পদ্ধতিতে বানানো হলে পুরো বিমানে জায়গা হতনা, তাই মাইক্রো টেক অবলম্বন করে বানানো হয়েছে তাই আকৃতিও কমেছে। এছাড়াও এগুলো কম বিদ্যুৎ এ অপারেট করা যায় ও ঠান্ডা করতে কম শক্তি লাগে।
রাডার ওয়ার্নিং রিসিভার/ ইএসএম:
- ডিজিটাল রিসিভার
- ৩ এন্টেনাবিশিষ্ট পড যা ইন্টেকের পাশে, উইংটিপের পডের ভিতর থাকে।
- ইন্টারফেরোমিটার (অঙ্গদৈর্ঘ্য বা প্রতিসরণাঙ্ক মাপার যন্ত্র)
- ২ থেকে ৪০ গিগাহার্জ এর ফ্রিকুয়েন্সি জেনারেটর, কিছু সোর্স ২০০ মেগাহার্জ এর মত কম ফ্রিকুয়েন্সি জেনারেটর আছে বলে দাবী করে
- এমিটারের স্যাটেলাইট লোকেশন জানার সিস্টেম
- এমিটার অনুযায়ী ২৫০ কিমি রেঞ্জ
- ডাইরেক্ট ইসিএম/ডিইসিএম
- ৩টি এইএসএ এন্টেনা ক্যানার্ড এর গোড়ায়
- পেন্সিলের ন্যায় সুক্ষ জ্যামিং বীম
- অফেন্সিভ ও ডিফেন্সিভ স্টেলথ মোড
ডিডিএম-এমএলডি:
- ২ টি মিড ওয়েভ ইনফ্রারেড সেন্সর উইংটিপ ও ভার্টিক্যাল ফিনের পডে।(৩৬০ ডিগ্রী কাভারেজ)
- ফিউসেলাজের সামনে ও পিছনে ৩টি সেন্সর যা ডিকয় ছুড়ে
- ৪ টি ফ্লেয়ার ও দুইটি চাফ ডিস্পেন্সার
সকল ডেটা একটি সেন্ট্রাল কম্পিউটার দিয়ে পরিচালিত হয়। এটি সর্বদা কাউন্টারমিজারকে অর্থাৎ বিমানকে রক্ষা করাকে প্রায়োরিটি দেয়। রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি জ্যামিং এইএসএ এন্টেনা দ্বারা সম্পাদিত হয়। এর নিজস্ব লাইব্রেরি আছে যা থেকে শত্রুর ব্যাপারে তথ্য মিলিয়ে শত্রুর ক্ষমতার পরিধি বিচার করে।
সব কাজ অটোমেটিক হয় শুধু নির্দেশটি পাইলট কর্তৃক ভয়েস কমান্ড বা টাচস্ক্রিন এর একটি ট্যাপ থেকে ইনিশিয়েট হয় !
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.