১৯৫০ এর দশকের শেষ দিকে আমেরিকান সরকার কিউবার নেতা ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে নতুন করে সরানোর পরিকল্পনা করে। আর সেই পরিকল্পনার দায়িত্ব দেয়া হয় তাঁদের পরীক্ষিত গোয়েন্দা বাহিনী সিআইএকে। কিন্ত কিউবাতে সিআই তেমন সুবিধা করতে পারছেনা। এইদিকে মার্কিন প্রশাসন চাপ দিচ্ছে সিআইএকে যেভাবেই হোক সরাতে হবে ক্যাস্ট্রোকে।

সিআইএ’র সামনে একটি বিশাল চ্যালেঞ্জ এসে দাঁড়ায়। কিউবার ভিত্তি বলে পরিচিত ফিদেল ক্যাস্ট্রোকে ক্ষমতা থেকে সরাতেই হবে। কিন্ত কিছুতেই কিছু হচ্ছেনা বিষয়টি এক পর্যায়ে সিআইয়ের সম্মানেও লাগে। অবশেষে সিআইএ একটি পরিকল্পনা করে যেটা চমকে যাওয়ার মতই।

পরিকল্পনার পুরো মাস্টার প্ল্যান নিয়ে সিআইএ গোছগাছ শুরু করে। পরিকল্পনাটা ছিল কিছু ভাড়া করা কিউবানদের দিয়ে আমেরিকার কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাকে হত্যা করা হবে। হত্যা পরিকল্পনার মূলে আরও থাকবে আমেরিকায় বিভিন্ন স্থাপনায় হামলা করে সন্ত্রাস সাধারণ মানুষ খুনের একটা মারাত্মক ছক বিস্তার করা এবং এই অস্থিরতার দায়ভার দেওয়া হবে কিউবার ফিদের ক্যাস্ট্রোর ওপর !!!

আমেরিকায় সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ তুলে পুরো বিশ্বের মনোযোগ কেড়ে নিয়ে কিউবায় সামরিক হামলা এবং ফিদেল ক্যাস্ট্রোর পতন নিশ্চিত করা। এ ভয়াবহ মাস্টার প্ল্যান শুধু জন এফ কেনেডির সম্মতির অভাবে বাতিল হয়ে যায়। কিন্তু তার মৃত্যুর পর সিআইএ’র এই মাস্টার প্ল্যান ফাঁস হয়ে যায়।

গোপন এই পরিকল্পনার নাম ছিল অপারেশন নর্থউডস।

সমালোচকেরা বলেন, অপারেশন নর্থউডস বাস্তবায়ন না হলেও এই মাস্টার প্ল্যান এখনো নানা দেশে নানাভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। নিজ দেশে সন্ত্রাসী হামলায় অন্য প্রতিদ্বন্দ্বী দেশকে অভিযুক্ত করে নিরাপত্তা ও শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে সামরিক হামলা চলছে। সিআইএ’র এই মাস্টার প্ল্যান সর্বকালের সবচেয়ে নগ্ন গোয়েন্দা কৌশল হিসেবে বিবেচিত।

অপারেশন নর্থউডস পড়লে আপনি আমেরিকার টুইন টাওয়ার সহ অনেক হামলার রহস্য মিলাতে পারবেন।

এই অপারেশন নর্থউডস এর পরিকল্পনা করেন লাইম্যান লিমনিটজের যিনি ছিলেন তৎকালীন সময়ের সিআইয়ের জয়েন্ট চিফ।

Lyman Louis Lemnitzer

ছবিতে লাইম্যান লিমনিটজ

Facebook Comments

comments