আধুনিক যুগের যুদ্ধক্ষেত্রে ট্যাংকের প্রথম ব্যবহার করেছিলো ব্রিটিশরা ১৯১৬ সালে। এরপর থেকেই ক্রমাগত ট্যাংকের ডিজাইনের উন্নতি হতে থাকে এবং কালক্রমে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে বিশ্বশক্তিগুলো নতুন ও তুলনামূলক শক্তিশালী ট্যাংক নিয়ে যুদ্ধে হাজির হয়।
শক্তিশালী ও শত্রুদের নিকট যম হিসাবে পরিচিত লাভ করা জার্মান টাইগার ট্যাংকগুলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শ্রেষ্ঠ ট্যাংক হিসাবে পরিচিত ছিলো৷ মানের দিক থেকে এদেরকে টক্কর দিতে না পারায় মিত্রশক্তি চিন্তা করলো সংখ্যা দিয়ে এদের ধরাশায়ী করার৷ তাই যুক্তরাষ্ট্র হাজির হয় তাদের এম-৪ শেরম্যান এবং সোভিয়েত ইউনিয়ন তৈরি করে টি-৩৪ ট্যাংক৷ এই দুটি ট্যাংকই যুদ্ধে বিপুল পরিমানে তৈরি করা হয়েছিলো জার্মানীর তৈরি টাইগার ট্যাংকের বহরকে আটকানোর জন্য।

German Tiger Tank

M3 LEE Tank

Mass Production Of Sherman

Minesweeper Version Of Sherman
শেরম্যান ট্যাংক দিয়ে লড়া প্রথম যুদ্ধ ছিলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে মিত্রশক্তির নর্থ আফ্রিকান ক্যাম্পেইন এ৷ যুদ্ধে এই ট্যাংকের মূল প্রতিপক্ষ ছিলো হিটলারের প্যানজার ট্যাংকের ডিভিশন৷ এই যুদ্ধে শেরম্যানের পারফরমেন্স তুলনামূলক সন্তোষজনক ছিলো যেহেতু প্যানজার ট্যাংক ছিলো তুলনামূলক হালকা এবং শেরম্যানের তুলনায় কিছুটা দূর্বল৷ তবে সময়ের সাথে সাথে জার্মানী আরো শক্তিশালি এবং ভারী ট্যাংক তৈরি করতে থাকে যার ফলে যুদ্ধে শেরম্যানের মূল প্রতিপক্ষ হয়ে দাড়ায় টাইগার সিরিজের ভারী ট্যাংকগুলো৷ তাই সে যুদ্ধ শেরম্যান ট্যাংকের পক্ষে জয় করা কঠিন হয়ে যায়৷

German Tank Division
ড্রাইভারের দক্ষতা বাদ দিলে যুদ্ধক্ষেত্রে ট্যাংকের শ্রেষ্ঠত্ব নির্ভর করে মূলত মোবিলিটি, ফায়ারপাওয়ার এবং আর্মরের দিক দিয়ে৷ সে যুদ্ধে টাইগার ট্যাংক ফায়ারপাওয়ার এবং আর্মরে এগিয়ে ছিলো এবং শেরম্যান এগিয়ে ছিলো মোবিলিটির দিক দিয়ে৷ তবে টাইগারের ভারী আর্মরের ফলে এর বডি ভেদ করতে প্রায়ই শেরম্যান ট্যাংক ক্রুদের বেগ পেতে হতো৷ তাছাড়া টাইগারের হাইভেলোসিটি প্রোজেক্টাইল শেরম্যানের যথেষ্ট ক্ষতি করতে সক্ষম ছিলো৷ তাই সেনারা ট্যাংকের বডিতে প্রায়ই অতিরিক্ত আর্মর প্লেট অথবা বালুর বস্তা লাগিয়ে নিতেন অতিরিক্ত সুবিধার জন্য ৷ প্রতিটি টাইগার ট্যাংককে ধরাশায়ী করতে ৪-৫টি শেরম্যান ট্যাংকের প্রয়োজন পড়তো৷

Sherman With Sandbags
নর্থ আফ্রিকান ক্যাম্পেইনের পর থেকে বড় বড় সব যুদ্ধ বিশেষ করে ইনভেশন অব নরম্যান্ডি ডি-ডে তেও এই ট্যাংকের অনেক ব্যবহার করা হয়৷ যুদ্ধের পরও কোরিয়ান ওয়ার এবং ভিয়েতনাম যুদ্ধে শেরম্যান ট্যাংকের বিপুল মাত্রায় ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়৷
“মজার বিষয় হলো, আপনি চাইলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যবহৃত এই শেরম্যান ট্যাংক এর সৌভাগ্যবান মালিক হতে পারবেন যেটা সম্পূর্ণ চালনা যোগ্য! তবে তার জন্য আপনাকে গুনতে হবে ২ লক্ষ ৭৫ হাজার ডলার”
শেরমান ট্যাংক এর কিছু ছবিঃ
Leave a Reply