১৯১৭ সাল।

সেন্টপিটার্সবার্গ দুর্গে কমিউনিস্টদের দ্বারা পতন হয় জার সাম্রাজ্যের। বলভেশীক বিপ্লব বা দশদিনের বিপ্লব যাই বলি না কেন এর ফল কেবল রাশিয়া নয় পুরো বিশ্ব রাজনীতির উপর প্রভাব পরে। ১৯১৮ সাল থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত এক গৃহযুদ্ধে পরে সোভিয়েত। ভ্লাদিমির ইলিচ লেলিনের নেতৃত্বে গঠিত হয় সোভিয়েত ইউনিয়ন, যার আদর্শ ছিল কমিউনিজম।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল একটি একদলীয় কমিউনিস্ট রাষ্ট্র, যার অস্তিত্ব ছিল ১৯৯১ সাল পর্যন্ত। ১৯৪৫ সাল থেকে ১৯৯১ সালে ভেঙে যাবার আগে পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়ন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী পরাশক্তি হিসেবে স্নায়ুযুদ্ধে লিপ্ত ছিল। এই বিপ্লব সারা বিশ্বে কমিউনিস্ট বিপ্লবহিসেবে পরিচিত ছিল। যার ফলশ্রুতিতে তাত্ত্বিক দর্শনের ভিত্তিতে প্রথম বাস্তব সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের সৃষ্টি হয় ১৯১৮ সাল।

ভৌগোলিক পরিসীমায় রাশিয়া সাম্রাজ্যের পরবর্তী সোভিয়েত ইউনিয়ন বিভিন্ন সময়ে পরিবর্তিত হয়েছে। তবে সর্বশেষ বৃদ্ধির পর সোভিয়েত ইউনিয়নের ব্যাপ্তি দাঁড়ায় বাল্টিক রাষ্ট্রসমূহ, পূর্ব পোল্যান্ডও বেসার্বিয়া পর্যন্ত।

ভৌগৌলিকভাবে পাশাপাশি সমমনা অঞ্চলগুলোকে একীভূত করে ১৯১৮-তে সৃষ্টি হয় সোভিয়েত ঐক্য ! বিভিন্ন সময়ে এর ব্যাপ্তি পরিবর্তিত হয় !

তবে, সর্বশেষ বৃদ্ধির পরে এর ব্যাপ্তি দাঁড়ায়-বাল্টিক রাষ্ট্রসমূহ,পূর্ব পোল্যান্ড ও বেসার্বিয়া পর্যন্ত; অর্থাৎ, রাশিয়াসহ ৪টি দেশের একটি ফেডারেশন গঠিত হয় !

 

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সোভিয়েত ইউনিয়ন থেকে বাদ দেয়া হয় ফিনল্যন্ডকে। ১৯৯১ পর্যন্ত সোভিয়েত ইউনিয়নে মোট ১৫টি প্রজাতন্ত্র একীভূত ছিলো !

এগুলো হচ্ছে-

১) আর্মেনিয়া
২) আজারবাইজান
৩) বেলারুশ
৪) এস্তোনিয়া
৫) জর্জিয়া
৬) কাজাখিস্তান
৭) কিরগিজিস্তান
৮) লাটভিয়া
৯) লিথুনিয়া
১০) মলদোভিয়া
১১) রাশিয়া
১২) তাজিকিস্তান
১৩) তুর্কমেনিস্তান
১৪) ইউক্রেন
১৫) উজবেকিস্তান

এসময়ে উল্লিখিত ১৫টি প্রজাতন্ত্রের ১১টি নিজেদের মধ্যে গঠন করে স্বাধীন দেশের একটি শিথিল রাষ্ট্রমণ্ডল !

বাল্টিক রাষ্ট্রত্রয়-লিথুনিয়া,লাটভিয়া ও এস্তোনিয়া এতে যোগ দেয় নি ! পরবর্তীতে ২০০৪ সালে এ-তিনটি রাষ্ট্র যোগ দেয় ন্যাটো ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে !

 

সোভিয়েত আফগান যুদ্ধই সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের কারন:

সোভিয়েত-আফগান যুদ্ধ হয়েছে “ইউনিয়ন অফ সোভিয়েত সোশ্যালিস্ট রিপাবলিক্‌স” (USSR) এর সামরিক বাহিনী এবং আফগানিস্তানের কম্যুনিস্ট-বিরোধী গেরিলাদের মধ্যে। শুরু হয়েছে ১৯৭৯ সালে, শেষ হয়েছে ১৯৮৯ সালে আফগানিস্তান থেকে সোভিয়েত সেনা প্রত্যাহারের মাধ্যমে।

যুদ্ধের শুরুতে আফগানিস্তানের মোট জনসংখ্যা ছিল ১ কোটি ৫৫ লক্ষ। যুদ্ধে আনুমানিক ১০ লক্ষ আফগান প্রাণ হারিয়েছে যার সিংহভাগই ছিল বেসামরিক জনতা। রুশ বিমানগুলো নির্বিচারে আফগানিস্তানের গ্রামের পর গ্রাম জনশূন্য করে দিয়েছে, বৃষ্টির মত বোমাবর্ষণ করেছে সাধারণ মানুষের ওপর।

সোভিয়েত বাহিনী প্রথম আফগানিস্তানে (তদানীন্তন গণপ্রজাতন্ত্রী আফগানিস্তান) প্রবেশ করেছিল ১৯৭৯ সালের ২৭শে ডিসেম্বর। এই প্রবেশের পেছনেও অবশ্য কার্যকারণ আছে। সোভিয়েত অনুপ্রবেশের আগে আগে ক্ষমতাসীন “পিপলস ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ আফগানিস্তান” (পিডিপিএ) দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিল। দুই গ্রুপের মধ্যে রীতিমত সংঘর্ষ শুরু হয়েছিল। ১৯৭৮ সালে সামরিক বাহিনীর বামপন্থী কর্মকর্তাদের ক্যু-র মাধ্যমেই পিডিপিএ ক্ষমতা দখল করেছিল। পার্টির দুই ভাগের নাম “খালক” (জনতা) ও “পারচাম” (পতাকা)। খালক ছিল কট্টরপন্থীদের দল, অপেক্ষাকৃত মডারেটরা গঠন করেছিল পারচাম।

সোভিয়েত ইউনিয়ন আফগান কম্যুনিস্টদের খালক অংশের নেতা হাফিজুল্লাহ আমিনকে হত্যা করে পারচাম অংশের নেতা বাবরাক কারমালের নেতৃত্বে একটি পুতুল সরকার গঠন করে। বাবরাক সোভিয়েত ইউনিয়নে নির্বাসন জীবন ত্যাগ করে আফগানিস্তানে ফিরে আসলেই দেশের সব অভ্যন্তরীন কোন্দল দূর হবে বলে আশা করেছিল সোভিয়েতরা। তাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল আফগানিস্তানকে পুরোপুরি নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখা।

কারণ এর মাধ্যমেই কেবল যুক্তরাষ্ট্রের হুমকি থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব। আফগানিস্তান যেহেতু তখন সোভিয়েত ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী দেশ ছিল সেহেতু এ অঞ্চলে একটি ব্রিজহেড (অগ্রসর বাহিনী শত্রুপক্ষের যে এলাকা দখল করে পশ্চাৎ বাহিনীকে সামনে এগুনোর সুযোগ করে দেয়) স্থাপনের মাধ্যমে মার্কিনীরা অনায়াসেই সোভিয়েতদের সাথে সরাসরি সীমান্ত সংস্পর্শ তৈরী করতে পারতো। তাছাড়া অতি সম্প্রতি ইরানে ইসলামী বিপ্লবের কারণে যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তার একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হারিয়েছিল।

সবারই জানা, খোমেনীর আগে ইরানের ক্ষমতায় আসীন শাহের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সুসম্পর্ক ছিল। তো, এই নাজুক পরিস্থিতিতে যে মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্র মিত্র সংকটে ভুগছিল সেটা বোঝার জন্য কেজিবি হওয়া লাগে না। স্নায়ু যুদ্ধের এই ক্রিটিক্যাল মুহূর্তে তাই প্রথম চালটা চেলেছিল সোভিয়েতরাই।

সোভিয়েত আগ্রাসন যথারীতি যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরে ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে আলোড়ন সৃষ্টি করে। বিদ্রোহী হয়ে ওঠে অনেকে। যুক্তরাষ্ট্রের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার আফগানিস্তানের ইসলামী প্রতিরোধ বাহিনীকে সাহায্য করার জন্য একটি নতুন প্রোগ্রাম হাতে নেয় যা “মুজাহিদিন” নামে সুপরিচিত।

১৯৭৯ থেকে ১৯৯১-এ সোভিয়েত ইউনিয়নের পতন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র এই প্রোগ্রামের অধীনে আফগানিস্তানকে আনুমানিক ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার সাহায্য দেয়- অস্ত্র-শস্ত্র সহ বিভিন্ন উপায়ে।

সোভিয়েত বাহিনী আফগানিস্তান থেকে নিজেদের প্রত্যাহার করে নিয়েছিল “জেনেভা অ্যাকর্ড” এ স্বাক্ষরের মাধ্যমে। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। অ্যাকর্ডের শর্ত ছিল, ১৯৮৯ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারির মধ্যে সকল সোভিয়েত সৈন্যকে আফগানিস্তান থেকে প্রত্যাহার করে নিতে হবে। আসলে সোভিয়েত বাহিনী তাদের ১০০,০০০ এরও বেশি সৈন্য নিয়ে কখনই আফগান প্রতিরোধ বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। এই প্রতিরোধ বাহিনীকে সাহায্য করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান, সৌদি আরব, চীন, ইরান, ইসরায়েল (বিশেষত- মোসাদ) এবং আরো কিছু দেশ। এছাড়া পারস্য উপসাগরের ধনকুবের ব্যবসায়ীরাও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।

১৩,০০০ সৈন্য হারানোর পর সোভিয়েত বাহিনী পিছু হটতে বাধ্য হয়, সোভিয়েত সাম্রাজ্যের সংস্কারবাদী নেতা মিখাইল গর্বাচেভ খানিকটা লজ্জার সাথেই তার প্রচণ্ড ব্যয়বহুল ভুলটা শুধরে নেয়ার চেষ্টা শুরু করেন। এই প্রত্যাহার প্রক্রিয়ায় গর্বাচেভের সিদ্ধান্তের যে একটা বড় ভূমিকা আছে এটা বোঝা যায় এভাবে: জেনেভা অ্যাকর্ডের পরও মার্কিন সরকার অ্যাকর্ডের শর্ত লঙ্ঘন করে মুজাহিদদের অস্ত্র সাহায্য দিতে থাকে। কিন্তু এই সাহায্যে ভয় পেয়ে সোভিয়েতরা পিছু হটেনি, পিছু হটেছে নিজেদের ইচ্ছায়।

অ্যাকর্ড পরবর্তী এই অস্ত্র সাহায্য উল্টো যে কাজটা করেছে তা হল, চরমপন্থী মুজাহিদ গোষ্ঠী গঠনের ভিত্তি তৈরী করে দিয়েছে। এই সাহায্যের মাধ্যমেই আফগানিস্তানে সবচেয়ে চরমপন্থী মুজাহিদ গ্রুপগুলো বিকশিত হতে শুরু করে, সেই সাথে আরব বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাদের সাহায্য আসার পথটাও কুসুমাস্তীর্ণ হয়।

উল্লেখ্য সেই সময় গঠিত এসব ইসলামী মৌলবাদী দলগুলোর মধ্যে “আল-কায়েদা” ও ছিল। ১৯৮৮ সালে আফগানিস্তানের মুজাহিদিন ক্যাম্পেই আল-কায়েদা গঠিত হয়। তাই এ কথা অনায়াসে বলা যায়, আফগানিস্তানে সোভিয়েত পতনের বীজ বপন হয়েছিল। এই সংঘাত সোভিয়েত জোটের প্রতি পুঁজিবাদ রাষ্ট্রের চাল ছিল, আর এর সাথে ছিল আরেক সমাজতন্ত্রধারী চীন। আসলে এর লক্ষ্য ছিল আফগানদের মুক্তির পক্ষে নয়, বরং মার্কিনিদের নিজেদের ঘাঁটি শক্ত করা।

তো যাই হোক এই যুদ্ধের ফলে সোভিয়েত অর্থনীতি বড় ধরনের ধাক্কা খায়। অসন্তোষ দেখা দেয় চার দিকে।

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে অবক্ষয়ের চিহ্ন সুস্পষ্ট৷ শিল্পে উৎপাদন কমছে, বেকারত্ব বাড়ছে, সেই সঙ্গে আছে লাগামছাড়া মুদ্রাস্ফীতি৷ জাতিগত বিরোধ বাড়ছে; জর্জিয়া, আজারবাইজানে গুলি চলছে৷ সোভিয়েত গণরাজ্যগুলির মধ্যে লিথুয়ানিয়া প্রথমে স্বাধীনতা ঘোষণা করে, এবং সেটা ১৯৯০ সালেই৷

১৯৯১’এর জানুয়ারিতে লিথুয়ানিয়ার রাজধানী ভিলনিয়াসে গোয়েন্দা পুলিশ কেজিবি’র বিশেষ কম্যান্ডো পাঠানো হয় মস্কো থেকে৷ সেখানকার টেলিভিশন টাওয়ারে কেজিবি’র অভিযানে ১৪ জন মানুষ প্রাণ হারায়৷ তা সত্ত্বেও লিথুয়ানিয়াকে সোভিয়েত ইউনিয়নে ফেরানো যায়নি।

গর্বাচভ চেয়েছিলেন সোভিয়েত ইউনিয়নের এক নতুন, আধুনিকতর সংস্করণ, যা তার অঙ্গ গণরাজ্যগুলিকে আরো বেশি সায়ত্তশাসন দেবে৷

পশ্চিমে যা আগে থেকেই আশঙ্কা করা হচ্ছিল: গর্বাচভের বিরুদ্ধে কট্টর সোভিয়েতপন্থিদের অভ্যুত্থান, যাদের মধ্যে প্রতিরক্ষামন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কেজিবি প্রধান ইত্যাদিরা ছিলেন৷

গর্বাচভ অসুস্থ, বলে তাঁকে ক্রিমিয়ায় তাঁর ছুটি কাটানোর বাড়িতে সপরিবারে বন্ধ করে রাখা হয়৷ বহির্জগতের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন৷ সোভিয়েত ইউনিয়নে জরুরি অবস্থা জারি করে মস্কোর রাস্তায় ট্যাঙ্ক নামানো হয়৷ এই পন্থায় নাকি সোভিয়েত ইউনিয়নকে ‘‘বিপর্যয়ের” হাত থেকে রক্ষা করা হবে।

কিন্তু এ-পন্থায় তা সম্ভব হয় নি কারন,
সোভিয়েত ইউনিয়ন গঠিত হবার পর থেকে সব সময় চরমপন্থি সমাজতান্ত্রিকরা ক্ষমতায় ছিল। তারা সবাই অর্থনৈতিকে মোটামুটি মানদণ্ডে রেখেই খুশি ছিল, বেশি লক্ষ্য ছিল কিভাবে সমাজতান্ত্রকে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে দেয়া যায় এবং এজন্য তারা সোভিয়েতের অনেক অর্থও খরচ করত।

১৯৮৫ সালে মিখাইল গর্ভাচেভ ক্ষমতায় আসে, সে সোভিয়েতের অর্থনীতিকে পশ্চিমের মত করতে চাইল. কিন্তু সোভিয়েতে সকল সিদ্ধান্ত হত কেন্দ্রিয়ভাবে – মস্কোতে। অন্যান্য রাজ্য নিজেদের উন্নতির জন্য কোন সিদ্ধান্ত নিতে পারত না।

মিখাইল গর্ভাচেভ অর্থনীতির জন্য কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা কমিয়ে সোভিয়েত রাজ্যগুলোর নিজেদের হাতে বেশি বেশি ক্ষমতা দিল, যেন তারা সেই ক্ষমতা ব্যবহার করে নিজেদের অর্থনীতি উন্নত করতে পারে। সে তাই অর্থনীতি উন্নত করার জন্য সে দুটো প্রোগ্রাম চালু করলো, “গ্লাসনস্ত আর পেরেস্ত্রইকা” – মূল কথা সব সমাজতান্তিক রাজ্যগুলোকে বেশি রাজনৈতিক স্বাধীনতা দেয়া।

কিন্তু পুরো ব্যপারটা হিতে বিপরীত হয়ে গেল। সোভিয়েতকে বেধে রেখেছিল শুধু সমাজতন্ত্র, এটা না থাকলে সোভিয়েতের রাজ্যগুলোর মাঝে কোন মিল নেই। না আছে ধর্মের মিল, না ভাষার, না জাতীয়তার, না ইতিহাসের – স্বাভাবিকভাবেই “গ্লাসনস্ত আর পেরেস্ত্রইকার” বদৌলতে তারা স্বাধীনতার দাবী করলো। কেন্দ্র (মস্কো) কিছুই করতে পারল না। কারন কেন্দ্র (মস্কো)-এর হাতে আর আগের মত অত ক্ষমতা নেই।

একই সময়ে রাশিয়া রাজ্যের প্রেসিডেন্ট বরিস ইয়েলৎসিন সোভিয়েতের ইউনিয়নের বাকি দুই প্রধান শক্তিশালী রাজ্য বেলারুস আর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্টের সাথে মিলে, নিজেদের রাজ্যের আরও বেশি স্বাধীনতা নিয়ে নিল। তারা আগের সোভিয়েত ইউনিয়ন বাদ দিয়ে, নতুন সংগঠন সি আই এস গঠন করল. কিন্তু সি আই এসের কোন সিদ্ধান্ত মানতে কোন রাজ্য বাধ্য নয়। সেদিন থেকে সোভিয়েত ইউনিয়ন ইতিহাস।

মিখাইল গর্ভাচেভ ২৫ সে ডিসেম্বর ১৯৯১ সালে টিভিতে তার পদত্যাগ আর সোভিয়েত ইউনিয়নের বিলুপ্তি ঘোষণা করল কিন্তু তার আগেই সে একজন রাজ্যহীন প্রেসিডেন্ট হয়ে গিয়েছিলো।

সোভিয়েত ইউনিয়ন ভাঙ্গার মূল কারিগর ছিল বরিস ইয়েলৎসিন। মূলত তিনি একাই সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে দিয়েছিল। আর গর্ভাচেভের বোকামির জন্য পরবর্তীতে তাকে নোবেল দেয়া হয় !

আসলে গর্ভাচেভ চাননি আফগান যুদ্ধে ভয়াবহ বিপর্যয়ের পর আবার একটা গৃহযুদ্ধ হোক। এদিক থেকে গর্ভাচেভকে অনেকেই সমর্থন করেন।

Facebook Comments

comments