SWADS এর পূর্ণ রূপ হলো The Special Warfare Diving and Salvage।
SWADS বাংলাদেশ নৌবাহিনীর একটি এলিট স্পেশাল অপারেশন ফোর্স। শুধুমাত্র বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও নৌবাহিনী থেকে কোস্টগার্ড এ যাওয়া পার্সোনেলদের এই বাহিনীতে রিক্রুট করা হয়। মাত্র ২/৩ % প্রার্থী টিকে যান, বাকিরা যোগ্য হবার পরও ঝরে পড়েন।
আমরা অনেকে US Navy SEAL দের নাম শুনেছি (লাদেন হত্যা মিশনে অংশ নিয়েছিল এই ফোর্স। পৃথিবীর সবচেয়ে দক্ষ আর মারাত্মক বাহিনী), যারা Special Naval Warfare and Development Group নামেও পরিচিত।
বাংলাদেশের SWADS সদস্যরা প্রশিক্ষন নেয় US Navy SEAL এবং Republic of Korea Navy এর UDT/SEAL দের থেকে।
SWADS এর অন্যান্য স্বতন্ত্র ইউনিট সম্পর্কিত তথ্য হাইলি ক্লাসিফায়েড হবার কারনে তাদের সম্পর্কে কিছুই জানা যায়না। ইউনিট গুলো হল SEAL, UDT, SBS, EOD/BD, BPC, SNIPER ইত্যাদি। ধারণা করা হয় এর সদস্য সংখ্যা ১০০০ এর মত এবং কমান্ড সেন্টার যেটা “নির্ভিক” নামে পরিচিত সেটা চট্টগ্রামের দক্ষিনে মায়ানমারের কাছে অবস্থিত।
আমাদের SWADS এর জম্ম ২০০৯ সালে, যদিও এর পরিকল্পনা হয় ১৯৭৬ সালে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের সময়ে কিন্তু তার সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হয় ২০০৮ সালে চট্রগ্রামে। বাংলাদেশের নেভি পার্সনেলরা আমেরিকার মাটিতে ৭০ এর দশক থেকেই ট্রেনিং নিচ্ছেন যদিও, কিন্তু তাদের ইন্সট্রাকটররা ২০০৮ সালের শেষদিকে SWADS এর গঠন এবং ট্রেনিং এ সাহায্য করা শুরু করে। SWADS আনুষ্ঠানিক ভাবে ২০০৯ সালে গঠিত হয় ১৫০ জন কমান্ডো এবং ২০০ জন ডাইভার নিয়ে।
SWADS কে বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রগন্য এবং অত্যাধুনিক সামরিক অস্ত্রশস্ত্র প্রশিক্ষন প্রোগ্রাম হিসেবে ধরা হয়। এ পর্যন্ত বাংলাদেশ সোয়াডস্ মার্কিন নেভি সিলদের সাথে টাইগার শার্ক এক্সারসাইজে জয়েন্ট ট্রেনিং এক্সচেঞ্জ প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছে।
গঠন প্রনালি ও শক্তিমত্তাঃ
একটা ব্রিগেড আকারে SWADS এর স্বীকৃতি দেয়া হয়। সত্যিকার সংখ্যা কখনো বলা হয় না।
SWADS এর ট্রেনিং সবচেয়ে সেরা, সবচেয়ে আধুনিক, সবচেয়ে ভয়ঙ্কর, সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ। এই স্পেশাল অপারেশন ফোর্সে যোগদানের জন্য বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সদস্যদের বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে এক্সট্রিম লেভেলের মানসিক, শারীরিক এবং অত্যাধুনিক অস্ত্র সরঞ্জামের প্রশিক্ষনের ভিতর দিয়ে যেতে হয়, যেটা দেয়া হয় বাংলাদেশের স্পেশাল ওয়ারফেয়ার স্কুল এবং বহির্বিশ্ব দুইজায়গা থেকেই। ঝরে পড়ার সম্ভাবনা ৯৮%। ইন্সট্রাকটররা আসে আমেরিকা, কোরিয়া এবং তুরস্ক থেকে, যারা “দ্য ব্রুট” নামে পরিচিত তাদের কঠিন স্বভাবের জন্য। একজন ক্যান্ডিডেটকে এক পারফেক্ট যোদ্ধা হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এই ব্রুটালিটির দরকার আছে।
আমাদের SWADS এর শক্তিমত্তা কেমন হতে পারে ধারণা নিয়ে নেন।
১৯৭১ সালের অপারেশন জ্যাকপট এর কথা যদি মনে থেকে থাকে তাহলে আপনারাও তাই বলবেন , কারন তখন কার সময়ে অল্প সময়ে সল্প কমান্ডো ট্রেনিং নিয়ে আমাদের বীর নৌ সেনারা যা অবস্থা করেছিল ! তাইলে এখন তার থেকে অনেক বেশি ট্রেনিংপ্রাপ্ত SWADS কি করতে পারে ধারণা করে নিন।
অস্রশস্ত্রঃ
SWADS এবং US Navy SEAL একই ধরনের ও সমমানের অস্ত্র ব্যবহার করে। আমাদের SWADS জলে, জলের অতলে, স্থলে এবং অন্তরীক্ষে সর্বপ্রকার যুদ্ধে পারদর্শী। স্পেশাল নাইট ভিশন গগলস সংযুক্ত ব্যালিস্টিক হেলমেট, আণ্ডারওয়াটার ভিডিও ইকুইপমেন্ট সহ সকল প্রকার কমব্যাট ওয়েপন ব্যবহারে পারদর্শী SWADS কমান্ডোরা। এই ফোর্সের প্রাইমারি ওয়েপন হল M4A1 রাইফেল।
এদের অস্ত্রের তালিকাটা বেশ লম্বা। তালিকায় আছে,
- Colt M4A1 SOPMOD
- Daewoo K2
- Type 56 assault rifle
- BD-08
- M24
- HK M416
- M16
- M203
- MK 19
- MP5
- CQBR (শুধুমাত্র সিল অপারেটিভদের জন্য)
- Accuracy International AS50
SWADS সাধারণত বিশ্বের অন্য যে কোন স্পেশাল ফোর্স থেকে বেশি ওয়েপন ব্যবহার করে।
SWADS এর অপারেশন এর পরিধি সম্পর্কে পুরোপুরি জানা না গেলেও সোয়াডস্ সাধারণত যে সমস্ত কাজ করে তা হচ্ছে,
সমুদ্র, শত্রুর নৌ-বন্দর, নৌ-বন্দর অকেজো করে দেয়া, বিহাইন্ড দ্যা এনিমি লাইন্স সহ বিভিন্ন ধরনের অপারেশনাল কাজ করে থাকে।
প্রাথমিক কাজ:
- Special reconnaissance
- Direct action
- Foreign internal defense
- Unconventional warfare
এছাড়াও,
- Anti-piracy
- Counter-insurgency
- Counter-narcotics
- Counter-terrorism
- Covert insertions/extractions
- Hostage rescue and personnel recovery
- Hydrographic reconnaissance
- Intelligence gathering
- Raids
- Underwater demolition
সোয়াডস্ এর অনেক কিছুই ক্লাসিফায়েড। তাই বিস্তারিত সব জানা সম্ভব নয়।
SWADS এমন একটা বাহিনী যা নিয়ে আমরা বাংলাদেশীরা গর্ব করতে পারি ❤
বাংলাদেশ SWADS এর আরো কিছু ছবিঃ
Leave a Reply
You must be logged in to post a comment.