বাংলাদেশ সশস্ত্রবাহিনীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শাখা হচ্ছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বাঙালী সদস্যদের নিয়ে এই বাহিনী গঠিত হয়। তার আগে ব্রিটিশ আমলে এটি বেঙ্গল আর্মি নামে পরিচিত ছিল। বর্তমানে এই বাহিনীতে দেড় লক্ষাধিক সশস্ত্র সদস্য রয়েছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নীতিবাক্যঃ সমরে আমরা, শান্তিতে আমরা, সর্বত্র আমরা দেশের তরে – In War, In Peace We are Everywhere for our Country.
উপমহাদেশের অন্যান্য সেনাবাহিনীর মতো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীও ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর আদলে গঠিত হয়েছে। অবশ্য এই বাহিনীতে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৌশলগত পরিকল্পনা কার্যপ্রণালী, প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি এবং প্রশিক্ষণ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে৷ এই বাহিনী গোলন্দাজ, সাঁজোয়া ও পদাতিক ইউনিট দ্বারা সুসজ্জিত৷
আধুনিক যুদ্ধে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বেশ অভিজ্ঞ। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীকে পরাজিত করার পাশাপাশি পার্বত্য চট্টগ্রামে বিচ্ছিন্নতাবাদী জঙ্গী দমনে বেশ সফল হয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। নব্বইয়ের দশকে গাল্ফ যুদ্ধে মক্কা মদীনার নিরাপত্তায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ২২০০+ সৈন্য প্রেরণ করে।
এছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অনেক কৃতিত্বের সাথে কাজ করে যাচ্ছে এবং দেশের সুনাম বৃদ্ধি করছে। আফ্রিকান জঙ্গীবাহিনীর সাথে যুদ্ধ করে তাদেরকে পরাজিত করার মাধ্যমে প্রতিকূল বিদেশী ভূমিতেও যুদ্ধের অভিজ্ঞতা এসেছে এই বাহিনীর।
সম্প্রতি অপারেশন থান্ডারবোল্ট এবং অপারেশন টোয়াইলাইট সফলভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে অভিজ্ঞতার ঝুলি আরও সাফল্যমণ্ডিত হয়েছে। এছাড়া অতীতে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ, চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস্ ইনসার্জেন্সি, গাল্ফ ওয়্যার এর মত যুদ্ধগুলোতে ও অংশগ্রহণ করেছে।
আমেরিকার পর বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যারা দেশকে শত্রুমুক্ত করার আগেই স্বাধীনতা ঘোষণা করে যুদ্ধ শুরু করেছে। আর এই যুদ্ধে প্রধান ভূমিকা পালন করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর অস্ত্রের তালিকা নিম্নরূপঃ-
ট্যাঙ্কঃ
- ব্যাটল ট্যাংক : ৪৫০+
- এমবিটি২০০০ : ৪৪টি।
- দুর্জয় ট্যাঙ্ক : ১৭৬+
- টাইপ৫৯ : ৬৬+
- টাইপ৬৯ : ২০০+
সেনাবাহিনীর আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে শীঘ্রই আরও ট্যাঙ্ক যুক্ত হবে। এক্ষেত্রে T-90MS, T-72B3, VT-5, K-21 LBT বিবেচনায় আছে।
আর্মড ভেহিকেলঃ
- বিটিআর৮০ : ৬৫০+
- এমটিএলবি : ৬৬ টি।
- অটোকার কোবরা২ : ২২ টি (আরও অজানা সংখ্যাক কেনা হয়েছে)
- অটোকার কায়া : কেনা হয়েছে, কিন্ত এখনো ডেলিভারি দেয়নি
- ফাহাদ এপিসি : মিশর : ৬৬ টি।
- বিটিআর-৭০ : রাশিয়া : ৫৫ টি।
- এমটি-এলবি : রাশিয়া : ৬৬+ ফুল মাল্টিরোল এপিসি।
- এম১১৩ : ইউএস : ১০+ ইউএন মিশনের জন্য লিজ নেয়া।
- বিটিআর-টি : আইএফভি : টাইপ ৫৪এ ট্যাঙ্ককে আপগ্রেড করে তৈরী করা হয়েছে।
- টাইপ-৮৫ : এপিসি : ৫০ টি।
এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমঃ
- FM-90 সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল
- FN-16 MANPADS (এখন বাংলাদেশেই বানানো হচ্ছে)
- QW-2 MANPADS
- চাইনিজ ৩৭ মি.মি. ম্যানুয়াল এন্টি এয়ারক্রাফট কামান।
- অয়েরলিকন জিডিএফ০০৯ অটোম্যাটিক এন্টি এয়ারক্রাফট কামান (কেনা হয়েছে, তবে এখনো ডেলিভারি দেয়নি)
- টাইপ-৫৬ ১৪.৫মি.মি. লো অলটিটিউড এন্টি এয়ারক্রাফট গান : অজানা সংখ্যক।
- টাইপ-৬৫ ৩৭মি.মি. মিডিয়াম অলটিটিউড এন্টি এয়ারক্রাফট গান : অজানা সংখ্যক।
- এল৬০/এম১এ১ এন্টি এয়ারক্রাফট গান : অজানা সংখ্যক।
- টাইপ-৫৯ : ৫৭মি.মি. এন্টি এয়ারক্রাফট গান : অজানা সংখ্যক।
মাল্টিপল লঞ্চ রকেটে সিস্টেমঃ
- চাইনিজ WS22A : ৩৬ টি। তবে আরও ৪৮ টি যুক্ত হবে এবং রকেটগুলো বাংলাদেশেই বানানো হবে (রেঞ্জ ৪৭ কি.মি.)
- চাইনিজ টাইপ৮২ : ৬+ সিস্টেম (১০+ কি.মি.)
- চাইনিজ টাইপ৯০ : ১৬+ সিস্টেম (৪০ কি.মি.)
- পাকিস্তানী KRL-122mm : অজানা সংখ্যক (২১ কি.মি.)
আর্টিলারিঃ
- নোরা বি-৫২ : ১৮ টি।
- এসএইচ-৫ : ১৮ টি (কেনা হয়েছে, এখনো ডেলিভারি দেয়নি)
- চাইনিজ Type-59 ১৩০ মি.মি : ৬২+
- চাইনিজ Type-96 ১২২ মি.মি : ৫০+
- চাইনিজ Type-54 ১২২ মি.মি : ৫০+
- আমেরিকান M101 : ১০৫ মি.মি : ৫০+
- সার্বিয়ান M56 : ১০৫ মি.মি : ১৫৪+
- চাইনিজ Type-83 : ১২২ মি.মি : ১১০+
- চাইনিজ Type-86 : অজানা সংখ্যক
- সিঙ্গাপুরিয়ান পেগাসাস ১৫৫ মি.মি : ১৮ টি কেনা হয়েছে, এখনো ডেলিভারি দেয়নি।
মর্টারঃ
- টাইপ-৮৩ মর্টার (চীন)।
- এম-২৯এ১ মর্টার (ইউএসএ)।
- টাইপ-৮৭ : ৮২মি.মি মর্টার (চীন)।
- ব্রান্ডট : ১২০মি.মি মর্টার (ফ্রান্স)।
- এম-৭৪ : ১২০মি.মি মর্টার (যুগোস্লাভিয়া)।
- ইউবিএম-৫২ : ১২০মি.মি (যুগোস্লাভিয়া)।
এয়ারক্রাফটঃ
- সি-২৯৫ [স্পেন] : ০১টি
- সেসনা-২০৮ [যুক্তরাষ্ট্র] : ০১ টি
- সেসনা-১৫২ [যুক্তরাষ্ট্র] : ০৫ টি
হেলিকপ্টারঃ
- Mi-171sh [রাশিয়া] : ০৬ টি
- ইউরোকপ্টার ডাউফিন [ফ্রান্স] : ০২ টি
- বেল-২০৬ [যুক্তরাষ্ট্র] : ০৩ টি
আনম্যানড এরিয়াল ভেহিকলঃ (UAV)
- ব্রামোর সি৪ইওয়াইই : সার্ভেইলেন্স ইউএভি : অজানা সংখ্যক।
- বাজ ড্রোন : সার্ভেইলেন্স ইউএভি : অজানা সংখ্যক।
- উইং লুং-২ : সার্ভেইলেন্স ও অ্যাটাক ইউএভি : চীন হতে এটি এক সিস্টেম ক্রয় করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতে জি২জি ভিত্তিতে আরো কিছু সংখ্যক ক্রয় করা হবে।
ট্যাঙ্ক বিধ্বংসী অস্ত্রসমূহঃ
- করনেট ইএম [রাশিয়া] : অজানা সংখ্যক ক্রয় করা হয়েছে, তবে এখনো ডেলিভারি দেয়নি।
- এইচজে-৮/বক্তার শিকান মিসাইল [চীন/পাকিস্তান] : ৩০০+
- স্পাইক এলআর [ইজরাইল] : অজানা সংখ্যক।
- মেতিস-এম মিসাইল [রাশিয়া] : ১২০০+
- পিএফ৯৮ রকেট [চীন] : অজানা সংখ্যক।
- আরপিজি-২৯ রকেট [রাশিয়া] : অজানা সংখ্যক কেনা হয়েছে, তবে এখনো ডেলিভারি দেয়নি
- টাইপ-৬৯ রকেট [চীন] : ৪০+
- টাইপ-৭০ রকেট [চীন] : ৬২+ টি
- টাইপ-৭৫ রিকয়েললেস রাইফেল [চীন] : ৭৫ টি
- কার্ল গুস্তাভ রিকয়েললেস রাইফেল [সুইডেন] : ৮৪ টি।
- এম-৪০এ১ রিকয়েললেস রাইফেল [যুক্তরাষ্ট্র] : ১০৫ টি।
- এম-৪০ রিকয়েললেস রাইফেল [যুক্তরাষ্ট্র] : অজানা সংখ্যক।
- টাইপ-৭৫ রিকয়েললেস রাইফেল [চীন] : অজানা সংখ্যক।
স্মল আর্মসঃ
- টাইপ-৯২ : ৯মি.মি. সেমি অটোমেটিক পিস্তল (চীন)।
- ব্রোউনিং এফএন-৩৫ : ৯মি.মি. সেমি অটোমেটিক পিস্তল (বেলজিয়াম)।
- টাইপ-৫৪ : ৭.৬২মি.মি. সেমি অটোমেটিক পিস্তল (চীন)।
- ওয়াল্টার-পিপিকে : ৯মি.মি. সেমি অটোমেটিক পিস্তল (জার্মানী)।
- রেমিংটন-৮৭০ : ১২ গেউজ সেমি অটোমেটিক শটগান (ইউএসএ)।
- সাইগা-১২ : ১২ গেউজ সেমি অটোমেটিক শটগান (রাশিয়া)।
- এইচ&কে জি-৩ : ৭.৬২মি.মি. অ্যাসল্ট রাইফেল (জার্মানী)।
- বিডি-০৮ : ৭.৬২মি.মি. অ্যাসল্ট রাইফেল (বাংলাদেশ)।
- টাইপ-৫৬ : ৭.৬২মি.মি. অ্যাসল্ট রাইফেল (চীন)।
- টাইপ-৫৬ এসকেএস : ৭.৬২মি.মি. সেমি অটোমেটিক অ্যাসল্ট রাইফেল (চীন)।
- এইম : ৭.৬২মি.মি. অ্যাসল্ট রাইফেল।
- এম৪এ১ : ৫.৫৬মি.মি. অ্যাসল্ট রাইফেল (ইউএসএ)।
- এআইএডব্লিউ : ৭.৬২মি.মি. স্নাইপার রাইফেল (ব্রিটেন)।
- ব্যারেট এম-৯৯ : ১২.৭মি.মি. স্নাইপার রাইফেল (ইউএসএ)।
- ড্রাগুনোভ : ৭.৬২মি.মি. স্নাইপার রাইফেল (সোভিয়েত ইউনিয়ন)।
- বিডি-০৮ : ৭.৬২মি.মি. এলএমজি (বাংলাদেশ)।
- টাইপ-৫৬ : ৭.৬২মি.মি. এলএমজি (চীন)।
- এইচ&কে ১১এ১ : ৭.৬২মি.মি. জিপিএমজি (জার্মানী)।
- টাইপ-৮০ : ৭.৬২মি.মি. জিপিএমজি (চীন)।
- বিডি-১৪ : ৭.৬২মি.মি. জিপিএমজি (বাংলাদেশ)।
- ডিএসএইচকে : ১২.৭মি.মি. এইচএমজি (সোভিয়েত ইউনিয়ন)।
- পিএপি এম৫৯ : ২২মি.মি. গ্রেনেড লঞ্চার (সোভিয়েত ইউনিয়ন)।
- এমজিএল এমকে১ : ৪৬মি.মি. গ্রেনেড লঞ্চার (দ. আফ্রিকা)।
- গ্রেন-৮৪বিডি : হ্যান্ড গ্রেনেড(অষ্ট্রিয়া/বাংলাদেশ)।
হেভি ট্রান্সপোর্টারস্ঃ
- ইভকো : হেভি ট্রান্সপোর্টার (ইতালি)।
- এমআইএমএ : হেভি ট্রান্সপোর্টার (চীন)।
- ডাব্লিউএস/এম-৪৮৬৬এস : হেভি ট্রান্সপোর্টার (ইউএসএ)।
- রেনাল্ট : ট্যাঙ্ক ট্রান্সপোর্টার (জার্মানি)।
- ম্যান-টিজিএ : ট্যাঙ্ক ট্রান্সপোর্টার (জার্মানি)।
সাপোর্ট ভেহিকলস্ঃ
- টিয়েমা এক্সসি-২২০০ : হেভি ট্রান্সপোর্টার (চীন)- এই ট্রাকগুলো মূলত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর টাইপ-৭৯এ রিবন ব্রিজ গুলো বহন করে।
- ভলভো এফএম-৪০০ : হেভি ট্রান্সপোর্টার (সুইডেন)- এই ট্রাক গুলো বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এসএলসি-২ ওয়েপন লোকেটিং রাডার গুলো পরিবহণ করে।
- রেনাল্ট টিআরএম রেকার : এগুলো মুলত বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে রিকভারী ভেহিকল হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
ট্যাকটিক্যাল ট্রাকঃ
- এসএক্স-২১৯০ : হেভি ট্রাক (চীন)।
- ইনান : হেভি ট্রাক (চীন)।
- ইসুজু : মিডিয়াম ট্রাক (জাপান।)
- বিএমসি-৩৮০ : মিডিয়াম ট্রাক (তুরস্ক)।
- ইউনিমগ : মিডিয়াম ট্রাক (জার্মানি)।
- মার্সিডিজ বেঞ্জ : মিডিয়াম ট্রাক (ফ্রান্স)।
- অরুনিমা বলিয়ান : লাইট ট্রাক (বাংলাদেশ)।
- বেডফোর্ড : লাইট ট্রাক (জাপান)।
লাইট ইউটিলিটি ভেহিকলঃ
- ডংফেং ইকিউ-২০৫০ : লাইট ইউটিলিটি ভেহিকল (চীন)।
- অঊরল্যান্ড এ-৩ : লাইট ইউটিলিটি ভেহিকল (ফ্রান্স)।
- মিতসুবিশি পাজেরো : লাইট ইউটিলিটি ভেহিকল (জাপান)।
- নিশান পেট্রল : লাইট ইউটিলিটি ভেহিকল (জাপান)।
- টয়োটা ল্যান্ড ক্রুজার : লাইট ইউটিলিটি ভেহিকল (জাপান)।
- ল্যান্ড রোভার : লাইট ইউটিলিটি ভেহিকল (ব্রিটেন)।
- কেআইএ-কেএম৪২০ : লাইট ইউটিলিটি ভেহিকল(দ. কোরিয়া)।
অ্যাম্বুলেন্সঃ
- আরএন-৯৪ : আর্মাড অ্যাম্বুলেন্স (তুরস্ক)।
- ল্যান্ড ক্রুজার : অ্যাম্বুলেন্স (জাপান)।
- এসিমেট ভিএলআরএ : অ্যাম্বুলেন্স (ফ্রান্স)।
- ল্যান্ড রোভার ডিফেন্ডার : অ্যাম্বুলেন্স (ব্রিটেন)।
- টয়োটা এলসি-৭০ : সাধারণ অ্যাম্বুলেন্স (জাপান)।
- ভল্কসোয়াগেন ক্রাফটার : অ্যাম্বুলেন্স (জার্মান)।
প্যারা-কমান্ডো ব্রিগেডঃ
মুক্তিযুদ্ধে ক্র্যাক প্লাটুনের অসাধারণ কার্যকারিতা মাথায় রেখে ১৯৭৬ সালে স্পেশাল ওয়্যারফেয়ার উইংস হিসেবে গড়ে ওঠে Bangladesh Army School Of Infantry & Tactics বা SIT এবং ১৯৮০ সালে এতে আর্মি কমান্ডো ও কাউন্টার ইনসার্জেন্সী কোর্স চালু হয়। একই বছর Spacial Wings টি Spacial Warfare School এ উন্নতি হয় এবং ১৯৮৮ সালে প্রথম প্যারা-ট্রেনিং কোর্স চালু হয়।
ধীরেধীরে প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি পাওয়ায় ১৯৯৩ সালের ৩’রা জুলাই ১-প্যারা কমান্ডো ব্যাটেলিয়ন গঠিত হয়। আন-অফিশিয়ালি একে চিতা-Cheetah বলেও সম্বোধন করা হয়। এটি বাংলাদেশের সবথেকে দক্ষ এবং এলিট স্পেশাল ফোর্স ব্যাটেলিয়ন। সর্বশেষ ২০১৬ সালের ৪ সেপ্টেম্বর তৎক্ষণাৎ ২-প্যারা কমান্ডো ব্যাটেলিয়ন গঠন করে ব্যাটেলিয়ন টিকে ব্রিগেডে উন্নতি করা হয় এবং একই বছরের ২’রা নভেম্বর সিলেটের জালালাবাদ ক্যান্টনমেন্টে আরেকটি ব্যাটেলিয়ন গঠন করে যোগ করা হয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিশেষ এই ইউনিটের সদস্যরা DO OR DIE মূলমন্ত্র বক্ষে ধারণ করে দেশের অভ্যন্তরীণ অশুভ শক্তির দমন (অপারেশন থান্ডারবোল্ট এবং অপারেশন টোয়ালাইট) এবং বিদেশের মাটিতে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী মিশনে সফলভাবে দায়িত্ব পালন করে দেশের মান মর্যাদা সমুন্নত করছে।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর এই বিশেষ অংশের দায়িত্ব হলোঃ
- কাউন্টার টেররিজমঃ মূলত বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড সহ সকল অপকর্ম দমন করে।
- কাউন্টার ইনসারজেন্সীঃ এটি একটি মিলিটারি অপারেশন, যা মূলত বিভিন্ন বিদ্রোহী গেরিলা বাহিনীর বিরুদ্ধে দেশের সশস্ত্র বাহিনী পরিচালনা করে মাতৃভূমিকে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা প্রদান করে থাকে।
- কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সঃ এটি সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা বিভাগের কার্যক্রম।
- এয়ারবর্ন অপারেশনঃ আকাশ পথে সেনাবাহিনীর বিশেষ প্রশিক্ষিত ইউনিটকে যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠিয়ে দেয়া হয়। এই অপারেশন, যুদ্ধের মোড় ঘুরিয়ে দিতে সক্ষম।
- স্যাবোট্যাজঃ এই অপারেশনে শত্রুর আস্তানা, ব্রিজ-কালভার্ট, ভারি স্থাপনা, অস্ত্রশস্ত্র সহ সবকিছু গুঁড়িয়ে দেয়া হয়।
- সহকর্মী বন্দি উদ্ধারঃ শত্রুপক্ষের নিকট কোনো সহকর্মী বন্দি থাকলে উদ্ধার করা।
- স্পেশাল এসাইনমেন্ট কিলিং
- গোপন তথ্য সংগ্রহ
- কমান্ডো হামলা
- জিম্মি উদ্ধার সহ আরো প্রভৃতি মিশন চালনা করা।
বাহিনীর এই বিশেষ অংশের প্রায় সব কিছুই টপ সিক্রেট, তাই প্রায় সব কিছুই রয়েছে অন্তরালে। তবুও এদের ব্যবহার করা কিছু ইক্যুইপমেন্ট এর একটা ধারনা দেয়া হলোঃ
- COLT
- M4A1
- KRISS VECTOR GEN-II
- TYPE-56
- TYPE-81
- DRAGUNOV SVD
- AIAW
- M1911
- MP5
- GLOCK
বি.দ্র: সেনাবাহিনীর অস্ত্রশস্ত্রের সঠিক সংখ্যা কখনো প্রকাশ করা হয়না। শুধুমাত্র ধারনা দেয়ার জন্য কাছাকাছি একটা সংখ্যা প্রকাশ করা হয়।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী– The Nation’s Pride বাংলাদেশের কোটি প্রানের আস্থার প্রতিক। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী যেমন দেশের অভ্যন্তরীণ সন্ত্রাসবাদ দমন, পাহাড়ে শান্তি আনয়ন, উদ্ধার-সংস্কার সহ দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় শ্যেনদৃষ্টিতে দায়িত্বপালন করছে; তেমনি বহিঃবিশ্বেও শান্তিরক্ষক হিসেবে নিয়োজিত আছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নিজের অকুতোভয়ী যোগ্যতাবলে বিদেশের মাটি থেকে ছিনিয়ে এনেছে ঘুমন্ত বাঘ উপাধি।
বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আফ্রিকার ক্ষুদ্র দেশ সিয়েরা লিয়নে গৃহযুদ্ধ চলাকালীন সেই দেশে শান্তিরক্ষক হিসেবে দায়িত্বপালন করে সে দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি স্বাভাবিক পর্যায়ে নিয়ে আসে এবং পরবর্তীতে সে দেশের সরকার বাংলা ভাষাকে তাদের একটি অফিসিয়াল ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান করে, যা বাংলাদেশের জন্য বড় ধরনের অর্জন।
বাংলাদেশের কোটি প্রাণের গৌরব বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
Leave a Reply