রাত ১টা বেজে ৫৬ মিনিট…
বাংলাদেশ-মায়ানমার ঘুমধুম সীমান্তে বিজিবির একটি পোস্ট ক্যাম্পে দাড়িয়ে পাহাড়া দিচ্ছে ০৬ বিজিবি সদস্য এবং দলটির নেতৃত্বে আছেন নায়েক সবুর খান। এত রাতে এই দূর্গম সীমান্তে শত্রুর ভয় নেই বললেই চলে। এমনটাই ধারণা এই ছয়জন সীমান্তরক্ষীর। ছয়জনের এই টহল দলটিতে ৪ টি চায়না রাইফেল ও দুইটি টাইপ-৫৬ এসএমজি রয়েছে। তারা সীমান্ত কাঁটাতারের পাশে দাড়িয়ে একে অপরের সাথে আলাপ করছিলো। হঠাৎ একটি বুলেট এসে বিধলো নায়েক সবুর খানের কপালে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই পর পর ধেয়ে আসা ৩ টি বুলেটে মাটিতে লুটিয়ে পড়লো আরো তিনজন। বাকী দুজনের একজন সিপাহী সাথে থাকা চায়না রাইফেল দিয়ে ফায়ার ওপেন করার আগেই মেশিনগানের একটি মিনি ব্রাশফায়ার তাকেও ঝাঁজরা করে দিলো। আকস্মিক আক্রমণে অবস্থা বেগতিক দেখে বাকী একজন সিপাহী আত্মরক্ষার্থে দৌড়ে পালাতে চাইলে পেছন থেকে তাকেও ব্রাশ ফায়ার করা হলো। সবার মৃত্যু নিশ্চিত করে ৬ টি লাশই টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়া হলো মিয়ানমার সীমান্তের ভেতরে।
এই ঘটনার ঘন্টা খানেক আগের দৃশ্যপটঃ
সীমান্ত পিলার থেকে বাংলাদেশের ৫০০ মিটার ভেতরে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর ৮০ সদস্যের একটি দল বাংলাদেশী ঘন ও অরক্ষিত পাহাড়ি জঙ্গলে গোপনে একটি অবৈধ ক্যাম্প গেড়েছে। তাদের উদ্দেশ্য গভীর রাতে বিজিবি চেকপোস্টে হামলা চালিয়ে সীমান্ত পাহাড়া নড়বড়ে করে দেয়া। পাশাপাশি আরো একটি গোপন উদ্দেশ্য তাদের রয়েছে, সেটি হলো রোহিঙ্গা শরনার্থীদের জন্য প্রস্ততকৃত খাবারে বিষ মিশিয়ে বিপুল পরিমাণ হতাহতের দায় বাংলাদেশের ওপর চাপানো এবং বিশ্বের কাছে বাংলাদেশকে প্রশ্নবিদ্ধ করা!
মিয়ানমারের বিশেষ এই বাহিনীর হাতে রয়েছে অত্যাধুনিক সব অস্ত্রশস্ত্র। সবার হাতেই রয়েছে ইসরায়েলের তৈরি উজি-৬ সাব মেশিনগান, বিভিন্ন মডেলের অটোমেটিক রাইফেল, ৯ মি.মি. পিস্তল, বিষাক্ত পয়জন মাখানো ছুরি, রয়েছে বেশ কয়েকটি ভারী মেশিনগান, এন্টি এয়ারক্রাফট গান, মর্টার, হ্যান্ড গ্রেনেড, ল্যান্ড মাইন ইত্যাদি। এই মিশনের জন্য এসব সদস্যদের বেশ কয়েকমাস প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী কর্তৃক। কারণ ইসরায়েলের সাথে মিয়ানমারের সম্পর্ক বেশ ভালো।
মিয়ানমার সেনাবাহিনী ২০০২ সালে তৎকালীন বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষীবাহিনী বিডিআর এর সাথে সম্মুখযুদ্ধে তাদের ২০০০ সদস্য খুইয়েছিলো। সেই প্রতিশোধ নিতেই মূলত এই ভয়ানক মিশন। বর্মী সেনা মেজর লিয়াং চো এর নেতৃত্বে এই ঘাতক দলটিতে রয়েছে দূর্ধর্ষ নাসাকা বাহিনীসহ সেনা নৌ ও বিমানবাহিনীর পরিক্ষীত সদস্যরা। মেজর লিয়াং ৮০ জনের এই দলটিকে মোট ৮ টি দলে ভাগ করেন। প্রতি দলে ১০ জন করে সদস্য। উদ্দেশ্য এই গভীর রাতে একই সময় ৮ টি পোস্টে হামলা চালিয়ে বিজিবি সদস্যদের হত্যা করে পোস্ট গুলোর অস্থায়ী দখল নেয়া। এর প্রথম ধাপ হিসেবে প্রথম দলটি বিজিবির নায়েক সবুর খানের দলটির উপর আক্রমণ চালিয়ে সকলকে হত্যা করে।
প্রথম ধাপ সফল হলে মেজর লিয়াং দ্বিতীয় দলটিকে আরেকটি সীমান্ত লাগোয়া ক্যাম্পে আক্রমণের নির্দেশ দেন। মিয়ানমারের দ্বিতীয় দলটি এই মধ্যরাতে বিজিবির আরেকটি ক্যাম্পে হামলা করলে এতেও ০৪ জন নিহত হন। দুজন বিজিবি সদস্য ফায়ার করতে করতে জঙ্গলের ভেতরে চলে যান আত্মরক্ষার্থে। এই দুজন সদস্যের মধ্য নায়েক রফিক তার পকেটে থাকা সেলফোন দিয়ে যোগাযোগ করেন বিজিবি সদরে তার এক ব্যাচমেটের কাছে। ফোন করে আকস্মিক হামলার বিষয় খুলে বলেন এবং দ্রুত উচ্চপদস্থদের জানাতে বলেন বিষয়টি। কিন্ত গুপ্ত ঘাতক দলটি এতক্ষণ তাদের অনুসরণ করছিলো তা খেয়াল করেননি নায়েক রফিক। মোবাইলে কথা শেষ করার আগেই তাকে এবং তার সাথের সিপাহী জসিম কে গুলি করে ও নির্মমভাবে জবাই করে হত্যা করে মিয়ানমারের ঘাতক দলটি।
ওদিক ফোনের অপরপ্রান্তে নায়েক রফিকের ব্যাচমেট সানোয়ার সব শুনতে পাচ্ছিলো কিন্ত তার কিছুই করার ছিলোনা রফিকের করুণ আর্তনাদ শোনা ছাড়া। পাগলের মত চিৎকার করতে করতে দৌড়ে সে অফিসার্স মেসের দিকে যায়। মধ্যরাতে আচমকা এমন ডাকচিৎকার শুনে বিজিবি অফিসারদের ঘুম ভেঙ্গে যায়। ওদিক বর্মী মেজর লিয়াং চো ইতোমধ্যে তার ৩য় দলকে আরেকটি বিজিবি পোস্টের দিকে আক্রমণের জন্য এগিয়ে যেতে নির্দেশ প্রদান করেছে….!(চলবে)
বিঃদ্রঃ এটি নিছক একটি গল্প এবং লেখকের মস্তিষ্কের একটি আবিষ্কার মাত্র। বাস্তবতার সাথে এর কোন মিল নেই। অতিতে বা অদূর ভবিষ্যতে এই গল্পে উল্লেখিত কোন স্থান, কাল, চরিত্র কোন জীবিত বা মৃতব্যাক্তির কাহিনীর সাথে মিলে গেলে সেটি নিতান্তই কাকতালীয় ব্যাপার, এজন্য লেখক কোনভাবেই দায়ী নন। সেইসাথে এই গল্পের সকল ছবিই মাত্র প্রতীকী হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।
লেখায়ঃ এইচ এম মেহেদী হাসান অর্নব ও এডমিন কর্তৃক সংযোজিত।
Leave a Reply