আতাগো ক্লাস ডেস্ট্রয়ার হচ্ছে এশিয়ার সবচেয়ে হেভিলি আর্মড ডেস্ট্রয়ার। এর সমকক্ষ ডেস্ট্রয়ার আপাতত আর নেই। কঙ্গো ক্লাস ডেস্ট্রয়ার এর কিছুটা আপডেটেড ভার্সন এটা। প্রতিটির মূল্য ১.৪৬ বিলিওন। ওজনে খালি অবস্থায় ৭৭০০ টন এবং সব লোড থাকা অবস্থায় ১০০০০ টন। ৩০০ জন ক্রুর প্রয়োজন হয়। এপর্যন্ত ২ টি সার্ভিসে এসেছে। সামনে এর আরেকটি ভার্সন বের হবে। এতে ভবিষ্যতে নিজস্ব প্রযুক্তির রেইলগান ও পয়েন্ট ডিফেন্স লেজার লাগানো হবে।
বর্তমান অস্ত্র ও সেন্সরস্যুটঃ
আতাগো ক্লাসের মূল সেন্সর হল আমেরিকান এএন/স্পাই-১ডি রাডার। সুতরাং বোঝায় যাচ্ছে এই জাহাজ এজিস কম্ব্যাট সিস্টেম দ্বারা পরিচালিত হয়।
এটির এজিস বেজলাইন ৭ ফেস ১ এর ভার্সন ব্যাবহার হয়েছে যা ভার্টিক্যাল ছোট টার্গেট আরো ভালভাবে ডিটেক্ট করতে পারে বেজলাইন -৪,৫ থেকে যেগুলা কঙ্গো ক্লাসে ছিল। আতাগো ক্লাস বানানোই হয়েছে ব্যালিস্টিক মিসাইল ধ্বংসের জন্য মাত্র দুইটি আতাগো ক্লাস পুরো জাপানকে ব্যালিস্টিক মিসাইল এর হাত থেকে প্রোটেকশন দেয়ার জন্য যথেষ্ট। এর এন/স্পাই-১ডি(ভি) রাডার ৩৬০ ডিগ্রীতে ১৭৫ কিমি দূর থেকে প্রতি এন্টেনায় ২০০ করে মোট ৮০০ টার্গেট ট্র্যাক করতে পারে। তবে সী স্কিমিং মিসাইলের ক্ষেত্রে তার রেঞ্জ ৪৫ কিমি। রাডারগুলো ৩.১-৩.৬ গিগাহার্জ ফ্রিকুয়েন্সির এবং এস ব্যান্ডের যা অপারেট করতে ঘন্টায় ৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ লাগে। সুতরাং বুঝতেই পারছেন কেন আমেরিকান বুর্ক রাডার বন্ধ করে চলাচল করে!
এছাড়াও সার্চ রাডার হিসেবে ওপিএস-২৮ই রয়েছে। এজিস কম্ব্যাট সিস্টেম ইকুইপড যেকোন জাহাজ পৃথিবীর যেকোন এজিস জাহাজের সাথে লিংকড। তারা যেকোন ইনকামিং থ্রেট একসাথে সমন্বয় সাধন করে ধ্বংস করে দিতে পারে।
৩ টি এএন/এসকিউএস-৫৩সি বো মাউন্টেড সোনার। এটি একাধারে প্যাসিভ ও এক্টিভ লো ফ্রিকুয়েন্সিতে অপারেট করা যায়। প্যাসিভ অবস্থায় ১.৭ এবং এক্টিভ অবস্থায় ৩-৪ কিলোহার্টজ ফ্রিকুয়েন্সি উতপন্ন করে। এটি ম্যাক্সিমাম আউটপুট ২৪০ কিলোওয়াট এবং রেঞ্জ ১৮-৬৪ কিমি।
৩টি এএন/এসকিউকিউ ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম রয়েছে। যা সকল সোনার, সনোবয়, টাওয়েড সোনারকে এজিসের সাথে সমন্বয় করে এবং পুরোপুরি আন্ডারসী ওয়ারফেয়ার ক্যাপাবল করে তুলে। এছাড়াও আরো তিনটি অপ্ট্রনিক ও ফায়ার কন্ট্রোল সিস্টেম আছে।
ইলেক্ট্রনিক ওয়ারফেয়ারের জন্য রয়েছে বিমান ও সাবমেরিন এর বিরুদ্ধে কার্যকর ২টি এমিটার। স্পেশাল ফিচার হিসেবে এএন/এসপিকিউ-৯বি সার্ফেস সার্চ রাডার রয়েছে।
অস্ত্র হিসেবে আছে,
- ১টি মার্ক-৪৫ ১২৭মিমি স্টেলথ শেপের নেভাল গান, যার রেঞ্জ ৩৮ কি.মি.।
- ২ টি মিসাইল ক্যানিস্টারে ৮ টি টাইপ ৯০ মিসাইল থাকে (এন্টিশিপ এবং ল্যান্ড এটাক) যার রেঞ্জ ১৫০ কিমি এবং ওয়ারহেড ২২৫ কেজি। এটি হারপুনের চেয়ে বেশি এডভান্সড।
- ২ টি ফালানক্স কিউস।
- ২×৩ টর্পেডো টিউব যাতে মার্ক-৪৬/টাইপ-৭৩ টর্পেডো ইকুইপড থাকে।
- ৯৬ সেলের মার্ক ৪১ ভার্টিক্যাল লঞ্চ সিস্টেম ! যার ৬৪ টি সামনে এবং পিছে ৩২ টি! যাতে নিম্নের অস্ত্রগুলির মিশ্রণ থাকে,
- এসএম-২ স্ট্যান্ডার্ড এয়ার ডিফেন্স মিসাইল
- এসএম-৩ এন্টি ব্যালেস্টিক মিসাইল যার রেঞ্জ ২৫০০ কিমি এবং গতি ১৫ মাক। সার্ভিস সিলিং ২৬৪ কিমি। এটি শুধু আমেরিকার বাইরে জাপান এবং জার্মানি ব্যাবহার করে। তার কারণ এর মিসাইলপ্রতি দাম ২৫ মিলিওন।
- আরইউএম-১৩৯ এসরক এন্টি সাবমেরিন রকেট যা ভিএলএস থেকে ফায়ার করা হয়।
- বিভিন্ন অপারেশনের জন্য একটি এসএইচ-৬০কে হেলিকপ্টার ও হ্যাংগারের ব্যাবস্থা আছে।
বিশেষত, এটি আর্লে বুর্ক এর থেকে ডিজাইন করা হলেও এটি তার চেয়ে বড়। দুইটি কমান্ড সেন্টারের যে ব্রিজটি রয়েছে তা বুর্ক ক্লাসের চেয়ে আরো উচুতে অবস্থিত। জাপান স্টিল ওয়ার্কস এটির পুরো বডি বানিয়েছে।
তবে একটি ব্যাপার উল্লেখ্য, এটি বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের জন্য বিশ্বশান্তি রক্ষার্থে এতে কোনো বিজিএম-১০৯ টমাহক মিসাইল ব্যাবহার করা হয়না। চাইনিজ টাইপ-৫২ডি জাহাজে এর চেয়ে বেশি অফেন্সিভ পাওয়ার আছে যদিও ৬৪ টি ভিএলএস রয়েছে কিন্তু অনেজ বেশি রেঞ্জের ক্রুজ ও এন্টিশিপ মিসাইল নিতে পারে। এর ডিফেন্সিভ পাওয়ার বেশি।
Leave a Reply